গ্রিক উপাখ্যানে মৎস্য কন্যার নাম সাইরেন-সাইরেন থেকে সেরিনা। গল্পের মূল চরিত্রের এমন নামকরণ তার ত্বকের মাধ্যমে পানির নিচে শ্বাস নিতে পারার বিশেষ ক্ষমতার পরিচায়ক। ডাক্তার শামীম একসময় শিশু সেরিনার এ বিশেষ গুণ লক্ষ্য করে সেরিনাকে উদ্ধার করেছিলেন এবং তার মেয়ের মত বড় করে তুলছিলেন। কিন্তু সেরিনার এই ক্ষমতা একসময় একদল বিদেশী বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কারণ হয়ে দাড়ায় এবং সেরিনার উপর গবেষণা করার জন্য তাকে তুলে নিয়ে যায়। সেরিনাকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও রক্তে থাকা ট্র্যাকারের জন্য সেরিনাকে সারাজীবনের জন্য সাগরে থাকার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
আপাতদৃষ্টিতে সেরিনা জাফর ইকবালের আরেকটি সায়েন্স ফিকশন মনে হলেও এর ট্রাজিক সমাপ্তির জন্য একে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া যায়। ছোট ছোট বাক্যে লেখক সমাজের অনেক অসঙ্গতির দিকে আঙ্গুল তুলেছেন। যেমন-
''--বাচ্চাকে পানিতে ফেলেছে কেন?
--কেন পানিতে ফেলেছে আপনি বুঝেন নাই? বার্লি খেয়ে বড় হয়েছেন?"
--কেন পানিতে ফেলেছে আপনি বুঝেন নাই? বার্লি খেয়ে বড় হয়েছেন?"
অথবা,
"গুলি মারি আমি হিপোক্রিটাসকে! ঘেন্না হয় আমার কেন
আবর্জনা ঘাটতে হবে? নর্দমার আবর্জনা কেন তুলে এনেছেন? এইখানে
সত্যিকারের মা বাবার সত্যিকারের বাচ্চা আছে। আমি কেন তাদের চিকিৎসা করবো।
পাপের সন্তানকে আমি কেন ছোঁব? যার জন্ম হয়েছে দোজখে যাবার
জন্যে তার জন্যে আমার কি দায়িত্ব?"
আবর্জনা ঘাটতে হবে? নর্দমার আবর্জনা কেন তুলে এনেছেন? এইখানে
সত্যিকারের মা বাবার সত্যিকারের বাচ্চা আছে। আমি কেন তাদের চিকিৎসা করবো।
পাপের সন্তানকে আমি কেন ছোঁব? যার জন্ম হয়েছে দোজখে যাবার
জন্যে তার জন্যে আমার কি দায়িত্ব?"
দিনশেষে সবকিছু ছাপিয়ে একজন বাবা ও তার মেয়ের করুণ বিচ্ছেদের চিত্রই এখানে মুখ্য হয়ে উঠেছে। এছাড়া রক্তের সম্পর্কের চেয়ে ভালোবাসার সম্পর্ক যে বেশী মূল্যবান তাও বারবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই রচনায়।
----------o----------
0 comments: